প্রাণপণ চেষ্টা করেও রোগীকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসক Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৩১ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
দুই সহযোগী অধ্যাপকের পুনর্বহালের দাবিতে শেবাচিম শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন যে কারণে বাবরের মুক্তি এখনই নয় ক্যানসার প্রতিরোধী টিকা তৈরি করেছে রাশিয়া, বিনামূল্যে বিতরণের ঘোষণা জিয়াউল আহসানের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে ওসমানীর অনুপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক, যা বললো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ৪: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লাকুটিয়া খাল পরিস্কারের পরও জনদুর্ভোগ, উদাসীন সিটি কর্পোরেশন বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান, ২ দালাল আটক বরিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের মৃত্যু, অক্ষত শিশু কন্যা অন্তর্বর্তী সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে: অ্যাটর্নি জেনারেল




প্রাণপণ চেষ্টা করেও রোগীকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসক

প্রাণপণ চেষ্টা করেও রোগীকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসক

প্রাণপণ চেষ্টা করেও রোগীকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসক
ডা. নিজাম




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসের কারণে থমকে আছে বিশ্ব। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। বেড়েই চলছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। শুরুতে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ থাকলেও এরইমধ্যে আক্রান্তদের সুস্থ করতে গিয়ে মারা গেছেন অনেক চিকিৎসক। তবু দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। এমনই এক করোনাযোদ্ধা ডা. নিজাম উদ্দিন মিজান। তিনি নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার।

 

 

মঙ্গলবার বিকেল থেকেই সঙ্গীদের নিয়ে করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি গিয়ে ওষুধ দেয়া, নতুন রোগীদের বাড়ি খুঁজে লকডাউনের কাজ করেন ডা. নিজাম। এভাবে তিন জায়গায় ঘুরে এক বাড়িতে গিয়ে দেখেন রবিউল নামে একজনের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অক্সিজেনের মাত্রা মাত্র ৩৫ শতাংশ। এ সময় সঙ্গে থাকা একজনকে পাঠিয়ে দিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার আনার জন্য। পরে অক্সিজেন দেয়া হলো রোগীকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অক্সিজেনের মাত্রা উঠে এলো ৯৬ শতাংশে।

 

 

সমস্যা দেখা দিল অক্সিজেন সরানোর পর। রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা সঙ্গে সঙ্গে নামতে লাগলো। বাইরে থেকে অক্সিজেন দিলে রোগী ভালো থাকেন, সরালেই দ্রুত নেমে আসতে থাকে। এ রোগীকে বাসায় রাখা মানে মৃত্যু নিশ্চিত, এ ভেবে রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার সিদ্ধান্ত নেন। হাসপাতালে এনে রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে কেটে গেল আরো কয়েক ঘণ্টা।

 

 

রাত তখন এগারোটা। সারাদিন মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়ে অনেকটা ক্লান্ত ডা. নিজাম। পিপিই খুলে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার জন্য শরীরটা ছেড়ে দিচ্ছে। ঠিক তখনই খবর এলো নিচে একজন রোগী এসেছেন। তার অবস্থা খুব খারাপ।

 

 

পিপিই পরেই নিচে নেমে গেলেন ডা. নিজাম। দেখলেন হাসপাতালের সামনে রাস্তায় এক কিশোর তার নিথর বাবাকে কোলে নিয়ে রাস্তায় বসে আছে। কাঁদতে কাঁদতে সাহায্য চাইছে সবার। তার বাবাকে বাঁচানোর জন্য আর্তনাদ করছে সে। আশেপাশে অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু কেউই সাহায্য করছে না।

 

 

ডা. নিজাম দ্রুত গিয়ে রোগীর নাড়ি চেক করলেন। পালস নেই। রোগীকে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে সিপিআর দেয়া শুরু করলেন তিনি। একটা সময় পালস পেলেন। তখনো সিপিআর চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সারাদিনের ক্লান্তির পর এ কষ্টকর কাজটা করার জন্য শক্তিটুকুও যেন অবশিষ্ট নেই তার। এরপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এ চিকিৎসক। বিকেল থেকে পিপিই পরা, মুখে এন-৯৫ মাস্ক। ক্লান্তির সঙ্গে শ্বাস নিতেও অসুবিধা হচ্ছিল তার। আর পারছেন না তিনি।

 

 

করোনাযোদ্ধা এ চিকিৎসক ক্লান্ত হয়ে থেমে যেতেই কিশোর ছেলে দায়িত্ব নেয়। পাশে থেকে দেখে বুঝে গেছে কীভাবে সিপিআর দিতে হয়। বাবাকে বাঁচানোর চেষ্টায় ক্রমাগত সিপিআর চালিয়ে যাচ্ছে সে। পাশে বসে রোগীর দিকে নজর রাখছিলেন ডা. নিজাম। হঠাৎ করেই রোগীর চোখ স্থির হয়ে গেল। এটা দেখেই দ্রুত পালস চেক করলেন তিনি। পালস নেই। তার চোখের সামনেই রোগী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ছেলেটা তখনো সিপিআর দিয়ে চলেছে। ওর কাঁধে আলতো করে হাত রাখলেন ডা. নিজাম। তার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো ছেলেটা, এরপর বাবার মুখের দিকে। স্থির হয়ে গেল ছেলেটির দুটি হাত।

 

 

ডা. নিজাম উদ্দিন মিজান বলেন, প্রাণপণ চেষ্টা করেও পঞ্চাশোর্ধ্ব পবন দাসকে বাঁচাতে পারিনি। কারণ আমাদের হাসপাতালে ভেন্টিলেটর সুবিধা নেই। ভেন্টিলেটর থাকলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত। তিনি বাঁচলে নিজেও স্বস্তি পেতাম।

 

 

ডা. নিজামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউপির পদিপাড়ায়। তিনি ঢাকাতেই লেখাপড়া করেছেন। গেল বছরের ১৯ ডিসেম্বর তিনি হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যোগ দেন। তিনি ৩৯তম বিএসএসে সরকারি চাকরি পান। মানব সেবার ব্রত নিয়ে এ পেশায় এসেছেন করোনাযোদ্ধা এ চিকিৎসক।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD